মেয়েদের কাউকে বলতে না পারা কিছু কথা

মেয়ে তো এতোটুকু কষ্ট সহ্য করতেই হবে;



বিছানায় লাল দাগ,দেখে মনে হলো রক্তের ছাপ।তা দেখেও স্বামী চলে গেল কাজে। বাসায় এসে স্বামী, স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিল স্ত্রী ও না পেয়ে হেসে দিল।আর মনে মনে ভাবছিল পিরিয়ডের জন্য পেটটা মারাত্মক ব্যাথা।এই পেট ব্যাথা নিয়ে বাসার সব কাজ-বাজ করলাম ভাবলাম দিনশেষে হয়তো একটু শান্তি পাবো,হয়তো একটু যত্ন পাব। কিন্তু না সে তো সকালেই দেখেছে বিছানায় রক্তের ছাপ,সেতো জানেই আমার পিরিয়ড হয়েছে।কিছু আর না ভেবে মেয়েটা রাজি হয়ে গেল তার স্বামীকে আনন্দ দেওয়ার জন্য। 

তারপর আর কি মেয়েটা তার স্বামীকে  আনন্দ দিচ্ছিল আর মনে মনে ভাবছিল জীবনে যখন প্রথম পিরিয়ডস হয় তখন রক্ত দেখে আমি অনেক ভয় পেয়েছিলাম ব্যথার চোটে  আমি কান্না পর্যন্ত করে দিয়েছিলাম। মাকে বলাতে মা বলে মেয়ে তো এটা সারা জীবনই হবে।আর মেয়ে তো এতটুকু কষ্ট তো সহ্য করতেই হবে। 

ফার্মেসিতে যখন সেনেটারি প্যাড  আনতে যেতাম ডাক্তারটাও যানি  কিভাবে তাকিয়ে থাকতো।প্যাকেটে করে যখন বাড়িতে নিয়ে আসতাম যারাও কোনদিন তাকাতোনা তারাও তাকিয়ে থাকতো,কেউ অবাক ভাবে তাকিয়ে থাকতো কেউবা আবার হাসাহাসি করত।মাকে বলাতে মা বলে এখন থেকে খবরের কাগজে মুড়িয়ে নিয়ে আসবি।আর মেয়ে তো এতোটুকু কষ্ট সহ্য করতেই হবে। 




পিরিয়ডসের জন্য যখন স্কুলে যেতে পারতাম না তখন স্কুল-কলেজের স্যার,ম্যাডাম,বন্ধু-বান্ধবরা  বাড়িতে ফোন দিতো। মা বলতো মেয়ে আমার অসুস্থ,মাকে বলতাম মিথ্যে কথা আর কতদিন।মা বলল মেয়ে তো আর এতটুকু কষ্ট করতেই হবে। 

রমজান মাসের যখন পিরিয়ডস  হতো তখন তো রোজা রাখতে পারতাম না,কেউ যখন জিজ্ঞেস করত কিরে রোজা রাখিস নি কেন? আমি বলতাম অসুস্থ তো তাই।অসুস্থ কথাটা শুনে কেমন ভাবে জানি সবাই তাকিয়ে থাকতো।বাড়িতে এসে যখন মাকে বলতাম,মা বলতো মেয়েতো এতটুকু কষ্ট সহ্য করতেই হবে। 

আর এখন পিরিয়ডসের মারাত্মক পেট ব্যাথা,অসুস্থকর শরীর,খিটখিটে মেজাজ তা নিয়েই স্বামীর আনন্দ মেটাচ্ছি ।

এটা আর মা কি বলবে, এটা তো আমি নিজেই জানি মেয়ে তো এতোটুকু কষ্ট সহ্য করতেই হবে। 

রক্তের দাগ,মারাত্মক পেট ব্যথা, অসুস্থকর শরীর চড়চড়া মেজাজ আর হাজারো মানুষের কুটুক্তি সহজ মনে হয়।

হ্যা হ্যা মেয়ে তো এতোটুকু কষ্ট সহ্য করতেই হয়।

                                                    প্রীতম সরকার।

Post a Comment

0 Comments